স্বদেশ ডেস্ক:
নারায়ণগঞ্জর শহরের চাষাঢ়ায় একটি রেস্টুরেন্টে প্রকাশ্য গুলি ছুড়ে রেস্টুরেন্টের ম্যানেজার ও এক কর্মচারীকে গুলিবিদ্ধ করেছে ওই ভবনের মালিক। আহতদের দ্রুত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
রোববার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ৯টায় শহরের চাষাঢ়ায় আঙ্গুরা প্লাজায় সুলতান ভাই কাচ্চিতে (সুমাইয়া কাচ্চি হিসেবে পরিচিত) এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ এ ঘটনা অভিযুক্ত বাড়ির মালিক আজহার তালুকদার ও তার ভাই আজিজুল হক তালুকদারকে রাত সোয়া ১১টার দিকে আটক করে থানার নিয়ে যায়।
এদিকে খবর পেয়ে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও অপারেশন) চাইলাউ মারমা ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন। এছাড়া জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একাধিক টীম ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে।
সুমাইয়া কাচ্চি হাউজের একাধিক কর্মচারী জানান, রাত সাড়ে ৯টায় হঠাৎ করে ভবনের মালিকদের একজন আজাহার তালুকদার আসেন। তিনি এসেই ম্যানেজারের কাছে পানির বিল নিয়ে টাকা চান। এনিয়ে তর্কের এক পর্যায়ে তার হাতে থাকা পিস্তল দিয়ে গুলি ছুড়েন। এতে ম্যানেজার কাজল ও কর্মচারী জনি পায়ে গুলিবিদ্ধ হন। পরে আশেপাশের লোকজন এসে আজাহারকে আটক করে।
আজহার তালুকদারকে ভাইয়ের স্ত্রী শারমিন ডলি জানান, পানির বিল নিয়ে তার ভাসুর আজহার তালুকদারের সাথে হোটেলের লোকজনের তর্কাতর্কি হয়। একপর্যায়ে আজহার তালুকদার গুলি ছুড়ে এতে দুইজন গুলিবিদ্ধ হয়েছে শুনেছি।
এদিকে হোটেল ঢুকে প্রকাশ্যে গুলির খবর পেয়ে রাস্তায় নেমে আসে নারায়ণগঞ্জ শহরের মানুষ। এ সময় প্রায় দুই ঘণ্টা সলিমুল্লাহ সড়কের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
এদিকে সুমাইয়া কাচ্চির মালিক শুক্কুর জানান, ‘ভবন মালিক আজহার তালুকদার এসে বলেন, পানির বিল বাবদ আপনাকে ১০ লাখ টাকা দিতে হবে। আমরা ১০ লাখ টাকা ঋণ হয়ে গেছি। আমি বললাম ১০ টাকা কেনো দিবো? আমি তো আপনার কাছ থেকে দোকান নেই নাই। তাছাড়া আমি তো পানির বিল প্রতিমাসে দিয়েই যাই। পানিসহ আমার ৮০ হাজার টাকা ভাড়া। পানির জন্য পাঁচ হাজার, আর ভাড়া ৭৫ হাজার।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমার সাথে আগে কোনো শত্রুতা ছিল না। শত্রুতা ছিল তাদের দুই ভাইয়ের মধ্যে।’
তিনি আরো জানান, ‘আমার বাড়িওয়ালা আজিজুল হক। তার কাছ থেকে আমি দোকান ভাড়া নিয়েছি। কিন্তু আজাহার তালুকদার তো আমার কাছে পানির বিল নিতে আসতে পারেন না। তিনি তার ভাইয়ের সাথে বুঝবেন।’
শুক্কুর আরো জানান, পানির বিল নিয়ে কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে আজাহার আমাকে খারাপ ভাষায় গালমন্দ করে। পরে আমিও গালি দেয়। এরপর তিনি বলে দাঁড়া আসতেছি। একথা বলে তিনি চলে যান। কিছুক্ষণ পর এসে তিনি গুলি করেন। এতে আমার ম্যানেজারসহ দু’জন আহত হন।
ম্যানেজার রিপন সাহা জানান, ভবন মালিক আজাহার তালুকদার রেস্টুরেন্টে এসে দোতলায় যান। সেখানে গিয়ে রেস্টুরেন্টের মালিকের সাথে কথা বলে চলে যান। কিছুক্ষন পর আবার ফিরে এসে হাতে থাকা পিস্তল থেকে ছয় থেকে সাতটি গুলি করেন। এতে ম্যানেজার সফিউর রহমান কাজলের হাতে ও পায়ে গুলি লাগে। তবে তিনি বলতে পারেননি কেন কী কারণে এ ঘটনা ঘটেছে।
এ বিষয়ে সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনিচুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ভবন মালিক আজাহার তালুকদার ও তার ভাই আজিজুল হককে আটক করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে।